This article was written by Professor Ghulam Azam’s son on what would have been his 92nd birthday. An English translation will follow shortly.
আব্বা আপনার ৯২তম জন্মদিনে আপনার অধম সন্তানের ভাবনা
আব্বা, আপনি বেচে থাকলে আজ আপনার ৯২ বছর পূর্ণ হতো। আমি জানি না আমার মনের এ কথাগুলো আপনার কাছে পৌছবে কি না। আল্লাহ চাইলে তিনি সবই পারেন। তাই আশা করি মহান রাব্বুল আলামীন আপনার কাছে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে এ ভালবাসার কোথাগুলো আপনাকে পৌছাবেন।
সাড়ে সাত বছর আগে আপনাকে শেষ দেখেছি। ইংল্যান্ডে আসলে আপনি আমার বাসায়ই এক মাস থাকতেন। বিয়ের পর ৯ বছর আপনাদের সাথে থাকার কারনে আমার সন্তানদেরকেই আপনারা নাতী-নাত্নী হিসেবে বেশী পেয়েছেন। আর ছোটকাল থেকে ভাইদের মধ্যে আমিই আপনাকে বেশী কাছে পেয়েছি। মনে বড় আশা ছিল একবার অন্তত আপনার সাথে আবার দেখা হবে, কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার যে আপনার পবিত্র মুখটি আর কোনদিন দেখতে পারবনা। আল্লাহ যেন তৌফিক দেন যেন আখেরাতে আপনার সাথে একত্রিত হয়ে আপনার পাশেই চিরকাল থাকতে পারি।
আব্বা, আপনি ছিলেন বহুগুনের সমন্বয়ের একজন মানুষ। এ ধরনের মানুষ আল্লাহ খুব বেশী দুনিয়াতে পাঠাননা। তাই আপনার মতো হওয়ার দুঃসাধ্য আপনার এ সন্তানের নেই। তারপরও এটুকু বলতে পারি যে আমি আজ যতটুকু হতে পেরেছি তার সবটুকু আপনার অবদান। আপনি শিখিয়েছেন, কোন অবস্থায় নামায কাযা করা যাবে না। আপনি শিখিয়েছেন দৈনন্দিন জীবনের অসংখ্য দোয়া যা আমি আমার সন্তানদের শেখানোর চেষ্টা করেছি। আপনি শিখিয়েছেন জীবনের কোন মুহূর্তেই নীতি-নৈতিকতার সাথে আপোষ করা যাবে না। আপনি শিখিয়েছেন কোনদিন কারো প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ন হওয়া যাবে না। আপনি শিখিয়েছেন কোনদিন জেনেশুনে কারও মনে কষ্ট দেয়া যাবে না। আপনি শিখিয়েছেন সকল ক্ষেত্রে এবং সকল বিপদ আপদে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে। আমার সৌভাগ্য ছিল যে নিজের চোখে আপনাকে দেখেছি এসব অক্ষরে অক্ষরে আমল করতে। আপনার মতো করে না পারলেও যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি আপনার এসব উপদেশ মেনে চলতে। আর এসব শিক্ষার কারনেই আপনার বিরুদ্ধে এতসব অবিচার ও শেষ মুহূর্তে আপনাকে দেখতে না পারলেও ধৈর্যহারা হইনি। শুধু দোয়া করেছি আপনার জন্য আর মনের ব্যথাগুলো শেয়ার করেছি আপনাকে যারা ভালবাসে তাদের সাথে।
আব্বা, নিন্দুকেরা আপনার প্রফেসর হওয়া নিয়ে কথা বলে। আপনি তো কোনদিন নিজেকে প্রফেসর হিসেবে দাবী করেননি। মানুষ দ্বীন ও আধুনিক বিষয়ে আপনার পান্ডিত্যের কারনে আপনাকে এই উপাধী দিয়েছে। আমার মনে পড়ে আমার নানা আপনাকে যখন চিঠি লিখতেন, তখন আপনাকে ‘মাওলানা’ বলে সম্বোধন করতেন। এরা বোঝেনা যে এটা সম্মানের উপাধী, শিক্ষকতা করে প্রমোশন পাওয়া কোন উপাধী নয়। তারা এটাও বোঝেনা যে আপনি শুধু একজন নেতাই ছিলেননা, অনেকের শিক্ষকও ছিলেন। এমন কোন শিবিরের প্রাক্তন নেতা পাওয়া যাবেনা যিনি আপনার ষ্টাডি সার্কেলে অংশ নেন নি। কারমাইকেল কলেজে স্বল্প সময়ের মধ্যে আপনি ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় শিক্ষক। আলহামদুলিল্লাহ ১৯৯৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডে শিক্ষকতা করে আমি আমার ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে অনেক সম্মান ও শ্রদ্ধা পেয়েছি। আমি মনে করি এর পেছনে আপনার কাছ থেকে শোনা অনেক মুল্যবান পরামর্শ সহায়ক হয়েছে।
আব্বা, আজ যখন বিভিন্ন স্মরন সভায় আপনার মানবিক গুনাবলী অন্যদের মুখে শুনি, তখন গর্বে মনটা ভরে যায়। যখন আপনার সহজ সরল জীবন যাপন, নিয়মানুবর্তিতা, সকলের প্রতি খেয়াল, নিরহংকারী অমায়িক ব্যবহার, আল্লাহর প্রতি অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস ইত্যাদি নিয়ে মানুষের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শুনি, তখন শুধু এ কথাই ভাবি যে আল্লাহ আমাকে কত বড় ভাগ্য দিয়েছেন যে আপনার মতো মানুষের সন্তান হতে পেরেছি। আপনার ছেলে হওয়ার কারনে আমি ও আমার চতুর্থ ভাই আমান আযমী বিভিন্ন সময় বৈষম্যের স্বীকার হওয়ায় আপনি মন খারাপ করতেন। কিন্তু আমরা সবসময় বলতাম যে, এসব পার্থিব সাময়িক সমস্যা থেকে আপনার শিক্ষা ও দোয়া নিয়ে এই দুনিয়াতে বেচে থাকাই সবচেয়ে বেশী গৌরবময়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আপনার সন্তান হবার কারনে যে ভালবাসা পেয়েছি তার তুলনায় বাংলাদেশে কিছু লোকের অন্যায় আচরন অতি নগন্য।
অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিলাম আব্বা, কিন্তু লিখতে পারছিনা। আপনার পবিত্র মুখটি শুধু চোখের সামনে ভেসে উঠছে আর চোখের পানি দু চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে। শেষ কটি বছর আপনি যে কষ্ট পেয়ে গেছেন সে কথা মনে পড়লে মনটা অস্থির হয়ে ওঠে। আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ এ কষ্ট দিয়ে আপনার মানুষ হিসেবে সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। এখন আপনি নিশ্চয়ই শান্তিতে আছেন ইনশা আল্লাহ। সকল কষ্ট, সকল মিথ্যা অপবাদ থেকে আল্লাহ আপনাকে মুক্ত করে দিয়েছেন। আর আপনার ইন্তেকালের পর মানুষের ভালবাসা প্রমান করেছে, যে আপনি কত ভাল মানুষ ছিলেন আর মানুষের কত প্রিয় ছিলেন।
আজ আপনার ৯২তম জন্মদিনে তাই আপনার জন্য আল্লাহর শিখিয়ে দেয়া দোয়া করি – রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা।
ইতি
আপনার অতি আদরের ছোট ছেলে সালমান
Dear Salman. I remember you as a teen young boy. Now your a father and a Professor too like your father. I wish you all the best. I also look forward in meeting with you soon. I told your brother Momen that I’ll visit him on my way to Bangladesh from California where I am living for the last 25 years. Please pray for me. Bye