Professor Ghulam Azam

Home » বাংলা » আযম’কে ‘প্রিজন সেল’এ না খাইয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে -আফিফা আযম

আযম’কে ‘প্রিজন সেল’এ না খাইয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে -আফিফা আযম

দৈনিক সংগ্রাম

জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের স্ত্রী মিসেস আফিফা আযম গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমার স্বামী অধ্যাপক গোলাম আযম আজ ৩৫ দিন যাবত কারান্তরীণ। তিনি গত ১১ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে আদালতে হাজিরা দেয়ার পর সেদিন জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে উনাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। শারীরিক অসুস্থতার জন্য একই তারিখে উনাকে বিএসএমএমইউ’-এর ‘প্রিজন সেল’এ ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে প্রথম ২/৩ দিন আমার স্বামীকে মোটা চালের শক্ত ভাত খেতে দেয়া হয়। ঐ খাবার তিনি খেতে না পারায় অনেক অনুরোধ/আবেদন ও বিবৃতির পর কর্তৃপক্ষ এরপর থেকে চিকন চালের ভাত ও ছোট মাছ খেতে দিচ্ছে। কিন্তু, তিনি কয়েক রকমের ভাজি/ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে অভ্যস্ত বিধায় হাসপাতালের সরবরাহকৃত খাবার তিনি খেতে পারছেন না। বাসা থেকে খাবার সরবরাহ করার অনুরোধ জানালেও হাসপাতাল ও কারা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্লিপ্ত ও নির্বিকারভাবে নিশ্চুপ রয়েছেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের পরিবারের সদস্য/প্রতিনিধিগণকে এড়িয়ে চলছেন।

১৫ ফেব্রুয়ারি আমার স্বামীর জামিনের দ্বিতীয় আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। সে অনুযায়ী আমার স্বামীকে ১০টার পূর্বেই কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সাড়ে ১০টায় এজলাসে উনাকে উপস্থিত করা হয়। মাননীয় আদালত প্রায় ২ ঘণ্টা উভয়পক্ষের  শুনানির শেষে আমার স্বামী আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বিজ্ঞ বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে উনার (আমার স্বামী) খাবারের দুরবস্থার কথা জানাতে চাইলেন। বিজ্ঞ বিচারক আমার স্বামীর কথা শুনলেন না।  ৯০ বছরের এক বৃদ্ধ, যিনি আদালতে এখনো দোষী সাব্যস্ত নয় বিধায় নির্দোষ বলে বিবেচিত, তিনি দু’বার ‘স্যার, স্যার’ বলে চিৎকার করে দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলেও বিজ্ঞ বিচারক উনাকে সরাসরি কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আমার স্বামীর উকিলকে জানতে বললেন যে, আমার স্বামী কি বলতে চান। আমার স্বামী তাঁর উকিলকে বললেন যে, ‘‘আমাকে এখন যে অবস্থায় ‘প্রিজন সেল’ এ রাখা হয়েছে, তাতে করে বিচার শেষ হওয়ার আগেই না খেয়ে খেয়ে আমাকে মরে যেতে হবে। খাবার রান্নার মান দেখলে ক্ষুধা অবস্থায়ও খাবার রুচি নষ্ট হয়ে যায়’’। পরে আমার স্বামীর উকিল, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, বিজ্ঞ বিচারককে আমার স্বামীর ফরিয়াদ অবহিত করেন।

জামিনের রায়ের শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২।  আদালতের রায় কি হবে জানি না। তবে, একজন ৯০ বছরের বৃদ্ধকে শুধুমাত্র অভিযুক্ত করে কারাবন্দী অবস্থায় ‘নির্জন সেল’এ একাকী রেখে মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি পরিবারের সেবা শুশ্রূষা থেকে বঞ্চিত রাখা এবং সর্বোপরি এভাবে না খাইয়ে রেখে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার কারণ আমাদের বোধগম্য নয়। এ ধরনের আচরণ যদি মানবাধিকার লংঘন না হয় তাহলে কোনটাকে মানবাধিকার লংঘন বলা হবে? আমরা করুণা চাই না, সহানুভূতি চাই না – সুবিচার চাই, মানবাধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হোক তা চাই। আমি এ ধরনের আচরণ প্রসঙ্গে দেশী-বিদেশী সকল মানবাধিকার সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।


Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s

%d bloggers like this: